স্বর্গচ্যুত
“আদমের লিঙ্গে হাত রেখে ইভ প্রথম বুঝেছিল এ সভ্যতা ফ্যালোসেন্ট্রিক”
কঠিন হও প্রিয় আদম নিশ্চল, কঠিন হও ঋজু কঠিন হও
অযথা সন্দেহে লড়াকু বাসি দেহে বিরহী এঁটো খিদে বিছোয় জাল
প্লাবন আমিষাশী, তুমিও বানভাসি, মাতাল ভাগীরথী শরীরে বও
মাদক বুনো ঘ্রাণে কি মায়া জাগে স্নানে, প্রথম মাংসের কার্নিভাল
#
তখনই জিভে রাখি লাভার ধারাপাত, পাহাড় পিচ্ছিল, হঠাৎ ঝড়
এবার শুরু হবে হিংস্র তাণ্ডব, আদিম যুদ্ধের শঙ্খনাদ
ধ্বংস শেষ করে শুয়েছে হোমানলে অর্ধ-ছাই-মাখা-নারীশ্বর
জ্যোৎস্না স্বৈরিণী, তাকে কি আমি চিনি? সূর্য গিলে খাওয়া ঋতুর চাঁদ?
#
আমাকে টেনে নাও এসব মোহ থেকে, অপার বিষপানে কণ্ঠ নীল
করেছি বারবার, এখনও পারাবার দীর্ঘ মন্থনে তেজ দেখায়
কোথায় অমৃত, নেই আর সম্বিতও, চেতন-অচেতনে শঙ্খচিল
ভ্রষ্ট সৈকতে ভোরের লং-শটে সভ্যতার দিকে মুখ ব্যাঁকায়
#
চতুর্দিকে বাড়ে সর্প অবতারে জটিল দেবতার আপেল গাছ
“কামড়ে খেয়েছিস মোক্ষ তৃপ্তির। গর্ভে পাপ নিয়ে এবার বাঁচ”
যুদ্ধ-পরিস্থিতি
শব্দগুলো ভেঙে মেশাও চামড়ায়, করবো অনুভব একতারায়
কিভাবে মূর্ছনা আকুল গাঙ হয়, কিভাবে সাড়া জাগে দুর্বিপাক
বেহায়া রাগগুলো লুটিয়ে মাখে ধুলো, নগ্ন ইচ্ছেরা ঠোঁট বাড়ায়
আকালে ক্ষুধা হও, আমার সুধা হও, আর যা কিছু উচ্ছন্নে যাক
#
হন্যে হয়ে ঘোরে বন্য শালীনতা, দ্রোহজ পাল্টায় সংস্কার
ইস্তেহার লেখে পূর্বপুরুষেরা তোমার খোলা পিঠে, আর তখন
ত্রস্ত শিহরণে কাঁপছে আত্মায় ঘনিয়ে আসা গাঢ় অন্ধকার
সোহাগ ভাবো যা তা আসলে দেহে গাঁথা ক্লান্ত মর্মর, উদযাপন
#
তবুও দৈনিক জরায় ম্লান লীন শ্রান্ত দায়সারা এ অঘ্রাণ
নধর নাগরীর মদনরসে আঁকে লজ্জা-বিজয়ের জয়তিলক
উহ্য গোঙানিতে যেভাবে খুঁজে পায় হার না মানা হারে তার স্লোগান
সেভাবে আমাকেও করেছ উদ্ধার, তোমার ত্বক ছেঁড়ে আমার ত্বক
#
ঢেউয়ে ঘাই মারে লুপ্ত চোরা স্রোত অর্থবহ কোনো উষ্ণতায়
মৌনব্রত
নিজেকে ছিঁড়ে ফেলে ওড়াই হাওয়া পথে, সজাগ আনমনা রাত্রিদিন সব
ব্যথিত যা যা সুখ রেখেছে বন্ধক, খুঁজেছে নতজানু কোন অসম্ভব
কার পায়ের ধুলো মেখেছে, কার কাছে চেয়েছে মাধুকরী প্রেমের উচ্ছ্বাস
মানের চেয়েও মন বড়ো অনেক তাই মরেছে বহুবার, মেটেনি অভিলাষ
#
এভাবে হররোজ বিকিয়ে যেতে যেতে এখনও যারা জ্বরে দগ্ধ হতে শেখে
তাদের দেখে যদি করুণা আসে তবে শিখবে ভালোবাসা আজ কাদের দেখে?
কাদের পোড়া দেহে মাখাবে চন্দন, কাদের ছাই ঘেঁটে অস্থি দেবে স্রোতে
যদি না তুমি তার চেয়েও বিপন্ন, যদি না ওই হৃদি আকুল হয়ে ওঠে
#
কে তবে তোমাকেও বলবে ভালো থাকো, কে তবে শুষে নেবে তোমার অভিশাপ
কে তবে শাস্তিতে নরকবাসে যাবে নিজের করে নিয়ে তোমার যত পাপ
তুমি তো তার দিকে ফিরেও তাকাবে না, যখন রাগে ঘোর মৌনব্রত নাও
ভোলার যা তা বেশ যত্নে মনে রাখো, মনে রাখার যা তা সহজে ভুলে যাও
#
এত নিবিড়, বলো কিসের অভিমান? এত অতল কোন স্তব্ধতার লেশ?
অহং উল্লাসে কি এত সুখ পাও? তাকেও শেষ করো, নিজেও হও শেষ
বানারস ব্ল্যুজ
গোপন সৃষ্টির আদিম যন্ত্রণা, উগড়ে ফেলা ভ্রুণ, রক্তপাত
যেন অসম্ভবে তোমার অবয়বে পৌষে বিনা মেঘে বজ্র হয়
স্তব্ধ উদ্যানে যেভাবে শীত নামে, রিক্ত ডালপালা বাড়ায় হাত
কিভাবে নেবে এই রুক্ষ সমাদর? এমন বৈরাগ তোমার নয়
#
গ্রহণ করো তবে গরল সোমরস, তরল উল্লাসে বিস্মৃতির
শুন্যে ঝাঁপ দিয়ে নিজেকে চিনে নাও। সপাটে চোখ রেখে যে আয়নায়
দৈব্য দর্শনে পেয়েছ দংশন, প্রশ্ন করো তার রাজনীতির
কেন সে তোমাকেই তমাল ভাবে, কেন তোমার হাতে তার মরণ চায়
#
শানিত তলোয়ারে বেঁকেছে ঘাটগুলো, নোনতা ঘাম ঝরে বিরামহীন
ধারণ করি তার উগ্র জলবায়ু, মন্ত্র পাঠ করি অনন্তের
আমাকে চন্ডাল করেছে মহাকাল, বাসনা অচ্ছ্যুত, রাত্রিদিন
স্পর্শদোষে কাঁপে নিবিড় অভিশাপে লৌহশৃঙ্খল গ্রহের ফের
#
কিন্তু অঘটন ঘটেই, জানো তুমি নিয়তিতাড়িত এ সোহাগশ্লেষ
অচিরে ছাই হবে, তবুও পুড়বে না নগ্ন স্পর্ধার নেশার লেশ